পৃষ্ঠাসমূহ

১৪ সেপ, ২০১৩

কথোপকথন ৩০-পুর্ণেন্দু পত্রী

—তুমি আমার সর্বনাশ করেছ শুভঙ্কর ।
কিচ্ছু ভাল লাগে না আমার ।কিচ্ছু না ।
জলন্ত উনুনে ভিজা কয়লার ধোঁয়া
আর শ্বাস কষ্ট ঘিরে ফেলেছে আমার দশ দিগন্ত।
এখন বৃষ্টি নামলেই কানে আসে নদীর পাড়
ভাঙ্গার অকল্যাণ শব্দ
এখন জোত্স্না ফুটলেই দেখতে পাই
অন্ধকার শশ্মানযাত্রীর
মতো ছুটে চলেছে মৃতদেহের খোঁজে।
কিচ্ছু ভাল লাগে না আমার।কিচ্ছু না।

আগে আয়নার সামনে ঘন্টার পর
ঘন্টা সাজগোজ
পাউডারে, সাবানে, সেন্টে, সুরমায়
নিজেকে যেন কেচে ফর্সা করে তোলার মত সুখ।
এখন প্রতিবিম্বের দিকে তাকালেই
সমস্ত মুখ ভরে যায় গোল মরিচের মত ব্রণে,
বিস্বাদে বিপন্নতায়।
এখন সমস্ত স্বপ্নই যেন বিকট মুখোশের
হাসাহাসি
দুঃস্বপ্নকে পার হওয়ার সমস্ত
সাঁকো ভেঙ্গে চুরমার।
কিচ্ছু ভাল লাগে না আমার। কিচ্ছু না।
—তুমিও কি আমার সর্বনাশ করনি নন্দিনী?
আগে গোল মরিচের মত এতটুকু ছিলাম আমি।
আমার এক ফোঁটা খাঁচাকে
তুমিই করে দিয়েছ লম্বা দালান।
আগাছার জমিতে বুনে দিয়েছ জলন্ত উদ্ভিদের
দিকচিহ্নহীন
বিছানা।
এখন ঘরে টাঙ্গানোর জন্য একটা গোটা আকাশ
না পেলে
আমার ভাল লাগে না।
এখন হাঁটা-চলার সময় মাথায় রাজছত্র না ধরলে
আমার ভাল লাগে না।
পৃথিবীর মাপের চেয়ে অনেক বড় করে দিয়েছ
আমার লাল বেলুন।
গোল মরিচের মত এই একরত্তি পৃথিবীকে
আর ভালো লাগে না আমার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন