১৪ সেপ, ২০১৩

কথোপকথন – ১৩ — পুর্ণেন্দু পত্রী

-তোমার মধ্যে অনন্তকাল বসবাসের ইচ্ছে, 
তোমার মধ্যেই জমিজমা ঘরবাড়ি। 
আপাতত একতলা.. 
হাসছো কেন? বলো হাসছো কেন? 
-একতলা আমার এক বিন্দু পছন্দ নয়, 
সকাল সন্ধ্যে চাঁদের সাথে গপ্পো গুজব; 
তেমন উঁচু নাহলে আবার বাড়ি নাকি? 
-আচ্ছা তাই হবে । 



চাঁদের গা ছুঁয়ে বাড়ি, 
রহস্য উপন্যাসের 
মতো ঘোরানো প্যাচানো সিঁড়ি ! 
বাঁকে বাঁকে সোনালী সাজানো স্বপ্নদৃশ্য । 
শিং সমেত মায়া হরিণের মুণ্ডু ... 
হাসছো কেন ? বলো হাসছো কেন? 
-কাটা হরিণ দেয়ালে ঝুলবে, অসহ্য । 
হরিণ থাকবে বনে, বন থাকবে আমাদের খাট পালঙ্কের চারধারে ! 
খাট পালঙ্কের নিচে ছোট্ট 
একটি পাহাড়, 
পাহাড়ের পেটচিরে ঝর্ণা । 
-আচ্ছা তাই হবে । 
পাহাড় চিরে ঝর্ণা, ঝর্ণার 
উপরে কাশ্মিরী কার্পেট.. 
সিলিং এ রাজস্থানী-ঝাড়ঝলে ঝাঝরীর মতোউপুর করা। 
জানালার গায়ে মেঘ, মেঘের 
গায়ে ফুরফুরে আদ্দির পাঞ্জাবী, 
পাঞ্জাবীর গায়ে লক্ষ্ণই চিকনের কাজ.. 
হাসছো কেন? বলো হাসছো কেন? 
-মেঘ রোজ রোজ পাঞ্জাবী পড়বে কেন? 
এক একদিন পরবে বালুচরী কিংবা 
খাটাও এর পাতলা প্রিন্ট, 
মাথায় বাগান-খোপা, 
খোপায় হীরের ...
...প্রজাপতি.. 
-আচ্ছা তাই হবে । 
মেঘ সাজবে জরি পাড় শাড়িতে 
আর তখনই নহবতখানার সানাই এর জয়জয়ন্তী, 
আর তখনই অরণ্যের 
রন্ধ্রে রন্ধ্রে বুনো জানোয়ারের 
হাকডাক । 
খাদে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য 
জেগে উঠবে জলপ্রপাত, 
শিকারের জন্য তীর ধনুক, 
দামামা দুন্দুভি... 
হাসছো কেন? বলো হাসছো কেন? 
-তুমি এমন ভাবে বলছো; 
যেন ভালবাসা মানে সাপে নেউলে ভয়াবহ একটা যুদ্ধ । 
ভয় লাগছে.. 
অন্য গল্প বলো ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন